ভারতীয় কর্মকর্তাদের ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলতে বছরে ৩৫০০ কোটি খরচ করে পাকিস্তান!

    Advertisements

    সময়টা ২০২২ সালের নভেম্বর। যৌনতার ফাঁদে পড়ে পাকিস্তানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্মীকে। তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছিল। পুলি‌শের দাবি ছিল, তিনি ‘হানিট্র্যাপ’-এর শিকার।

    পাকিস্তানের এই ‘হানি ট্র্যাপের’ প্রধান টার্গেট ভারতীয় সেনা ও প্রশাসনিক কর্তারা। যৌনতার টোপে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে প্রতি বছর প্রায় ৩৫০০ কোটি টাকা খরচ করছে পাকিস্তান। সম্প্রতি একাধিক তদন্তে এই বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে।

    ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এই ‘হানি ট্র্যাপে’ একাধিক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মী এবং বৈজ্ঞানিকরা পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের মধুফাঁদের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘র’ অফিসার থেকে শুরু করে DRDO-র শীর্ষ বিজ্ঞানী- অনেকেই এই ফাঁদে পড়েছেন। বিশেষ করে ডিআরডিও’র বিজ্ঞানী প্রদীপ কুরুলকরের ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। হোয়াটসঅ্যাপে এক তরুণীর সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় তিনি ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র-সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা তথ্য ফাঁস করেন বলে অভিযোগ।

    ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ‘হানিট্র্যাপের’ প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ই খুলে ফেলেছে রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দপ্তর। পাকিস্তানের স্থানীয় কলেজগুলি থেকে ৯০০ জন সুন্দরী তরুণীকে নিয়োগ করা হয়েছে সেখানে। ভারতীয় কর্তাদের যৌনতার ফাঁদে ফেলতে সেখানে নাকি ওই তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

    পাক সেনার গোয়েন্দা ইউনিট ৪১২ সিন্ধ প্রদেশের হায়দরাবাদ থেকেও কাজ করে একটি ‘হানিট্র্যাপ’ মডিউল। কিন্তু কী ভাবে চলে সেই প্রশিক্ষণ? কী ভাবেই বা পাতা হয় ‘হানিট্র্যাপে’র ফাঁদ?

    Advertisements

    প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথমে ওই পাক তরুণীদের নাম বদলে পূজা, মুসকান, হরলিন, ববিতা ইত্যাদি রাখা হয়। এর পর চলে যৌনতার ফাঁদে ফেলার প্রশিক্ষণ। পঞ্জাবি, রাজস্থানি, হিন্দি এবং আরও বেশ কয়েকটি ভাষাও শেখানো হয় তাদের। শুধু তাই-ই নয়, তাদের চালচলন, হাবভাব এবং পোশাক-আশাক কোনও কিছু দেখে বোঝার বিন্দুমাত্র উপায় থাকে না যে এই মহিলারা পাকিস্তানের গুপ্তচর।

    মিশন চালানোর জন্য কলেজছাত্রীদের পাশাপাশি স্থানীয় যৌনকর্মী এবং গরিব মহিলাদের কাজে লাগানো হয়। তাদের পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ প্রশিক্ষণ দেয়। পাক সেনার ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার আধিকারিকদের অধীনে এই মহিলাদের প্রশিক্ষণ চলে।

    শিকার ধরার কৌশলও নিখুঁত- প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর ব্যক্তিগত আলাপ, শেষে যৌনতা। নগ্ন ছবি বা ভিডিও পাঠিয়ে টার্গেটকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। হোটেল বুকিংয়ের সময় ঘর সাজানো হয় ভারতীয় পারিবারিক পরিবেশে। যদি ভিডিও কল হয়, পেছনে রাখা হয় হিন্দু দেবদেবীর ছবি- যাতে সন্দেহ না হয়।

    এই ফাঁদের শিকার হন অনেকেই, তবে আশার কথা, অধিকাংশ ভারতীয় আধিকারিকই সতর্ক থাকেন এবং পাক গোয়েন্দা সংস্থার এই চাল ব্যর্থ করে দেন। প্রতিনিয়ত ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি রাখছে।

    পাকিস্তান আইএসআই-এর এমন হানিট্র্যাপ নেটওয়ার্ক এখন সীমান্ত পেরিয়ে ভার্চুয়াল জগতেও বিস্তৃত হয়েছে। ফলে দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় আরও সচেতন থাকা আজ সময়ের দাবি।

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *