ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে যোগ দিলেই মিলবে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ। শর্ত অনুযায়ী এ ঋণ পেতে যোগ দিতে হবে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত একটি সমাবেশে।
সমাবেশে যোগ দিতে রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক’শ নারী পুরুষ নিয়ে ১০টি বাস ও অন্তত ১৫টি মাইক্রোকার নিয়ে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করে অন্তত পাঁচ শতাধিক নারী ও পুরুষ। এসময় গাড়িগুলো পথিমধ্যে আটকে দেন স্থানীয় উৎসুক জনতা।
এ কাজের সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি স্থানীয়রা। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।
তবে বাস ড্রাইভার সোহেল জানান, আলমগীর ও সিরাজ নামে দুই ব্যক্তি তাদের ঢাকায় যেতে ভাড়া করেছেন। এখন গাড়ি থেকে সঠকে পড়েছেন তারা।
এ সময় জেসমিন আক্তার নামে এক নারী জানান, আগামীকাল ২৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে যোগ দিতে লোকজন নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুসের কাছে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। ওই টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে প্রত্যেক আবেদনকারীকে এক লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। তাছাড়া দেশের ৬৪ জেলা থেকেই লোকজন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে যোগ দিবেন বলে জানান তিনি।
হারন অর রশিদ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তিনি এলাকার মানুষের কাছে ফরম বিক্রি ও ঢাকায় যেতে উদ্ভুদ্ধ করেছেন বলেও জানান তিনি।
শিল্পী আক্তার নামে এক নারী জানান, ১০ টাকার বিনিময়ে জেসমিন আক্তার তাকে ১ লাখ টাকা ঋণ দিবেন বলে আবেদন ফরম পূরণ করিয়েছে। পরে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে যোগ দেওয়ার পর দিলে ঋণ চুড়ান্ত হবে বলে জানান। এতে ঢাকায় যাওয়া-আসা গাড়ি ভাড়া হিসেবে জেসমিন তার থেকে নগদ ১ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এছাড়া চক্রটি তার মতো পাঁচশতাধিক মানুষের থেকে একহাজার টাকা করে হাতিয়ে নেন।
জানা গেছে, ঋণ নিতে আগ্রহীদের প্রতারকরা ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে সম্মেলনে উপস্থিত হতে উদ্বুদ্ধ করে। ঋণের আবেদন ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে তারা নিয়েছে এক হাজার টাকা। ঋণপ্রত্যাশী ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য দেওয়া হয়েছে টোকেন। টোকেনধারী সবাইকে দেওয়া হবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে তিন লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ।
স্থানীয় জামায়াত নেতা সৈয়দ আনোয়ার হোসেন জানান, অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটিও একটি ষড়যন্ত্র মনে করছেন তারা। যে কারণে গাড়িগুলো আটক করে পুলিশকে খবর দিয়েছেন। প্রশাসন সঠিক বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন আসা করছেন তিনি।
কমলনগর থানার ওসি তহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের ফোনে গাড়ি আটকের বিষয়টি অবগত হয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উৎস: যুগান্তর।